যুদ্ধবিরতি শেষে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি স্থল ও বিমান বাহিনী অভিযান শুরুর প্রথম দিনে ১৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এএফপি।

গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার পর জিম্মি-বন্দি বিনিময় এবং গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দিতে ২৫ নভেম্বর সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে ইসরাইল এবং গাজা উপত্যকা সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। সেই বিরতি শেষ হয় শুক্রবার ভোরে উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান ও স্থলবাহিনীর অভিযান শুরুর মধ্যে দিয়ে।

শুক্রবার ভোরের দিকে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হিলোটের বাসিন্দারা সাইরেনের শব্দে জেগে ওঠেন। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, গাজা থেকে রকেট ছোড়া হয়েছিল এবং ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সেই রকেট আঘাত হানার আগেই তা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলের হামলায় ১৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৮৯ জন। এ ছাড়া ২০টি বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এ ঘটনায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসাইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘ বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদ তাদের আইনগত এবং নৈতিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হলো ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমাদের সাহসের সঙ্গে স্বীকার করে নিতে হবে ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনিদের প্রশ্নে আইনগত ও নৈতিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ। এই ব্যর্থতার একমাত্র কারণ হলো দখলদার বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সমর্থন। এ ছাড়া ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতেও কোনো পদক্ষেপ কার্যকর করতে দিচ্ছে না মার্কিন প্রশাসন। এটি আসলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘ ব্যবস্থার জন্য একটি নৈতিক ব্যর্থতা এবং বিবেকের অবমূল্যায়ন।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলা চালায়। জবাবে ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর মধ্যে জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের কয়েকটি জায়গায় আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালায় ইসরায়েলি সেনারা। পরে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর ৪৮ দিন পর গত ২৪ নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।